রবিবার, ২৯ Jun ২০২৫, ০৩:১১ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করছে অর্ধ লক্ষাধিক পরিবার

নুরুল আলম সাঈদ, নাইক্ষ্যংছড়ি :
পার্বত্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৫ ইউনিয়নে পাহাড়ী উচুঁ- নিচু টিলার পাদদেশে ঝুকিপূর্ণ স্থানে বসবাস করছে অর্ধ লক্ষাধিক পরিবার। গত কয়েক বছর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধ্বসে প্রাণহানির ঘটনায়, বর্তমানে এসব পাহাড়ী টিলায় বসবাসকারীরা চরম আতঙ্কে দিন  কাটাচ্ছে  । দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ী উঁচু-নিচু টিলা টিলায় শত শত পরিবার ঝুকিপূর্ণ স্থানে  বসবাস করে আসলেও প্রশাসন তাদের দমিয়ে রাখতে পারছেনা। বর্ষা মৌসুমে মাইকিং করে ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পাহাড়ী পাদদেশে বসবাসকারীদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হলেও অসহায় দরিদ্র মানুষ মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়েই ঝুকিপূর্ণ  পাহাড়ে বসবাস করে যাচ্ছে। এতে গত কয়েক বছর ধরে এই উপজেলায় পাহাড় ধ্বসে প্রাণহানির একাধিক ঘটনা ঘটছে। সূত্র মতে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের  স্কুল পাড়া, পর্যটন উপবন এলাকা  যৌথ খামার  জারুলিয়াছড়ি, লেমুছড়ি, বাগানঘোনা, আদর্শগ্রাম, নারিচবুনিয়া, রেজু বড়ইতলী, চেরারমাঠ, আলিক্ষ্যং, ম্রুরং পাড়া,চাকঢ়ালা, বিছামারা,জুমখোলা বাইশ ফাড়ী, ফুলতলী, আমতলী, বাহির মাঠ এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুকিপূর্ণ বসবাস করছে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। এছাড়াও সীমান্তের প্রত্যন্ত উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকায় অসহায় দরিদ্র মানুষ বসবাস করছে পাহাড়ের পাদদেশে। মাথা গুজানোর মত বিকল্প কোন জায়গা না থাকায় এসব অসহায় দরিদ্র মানুষ প্রাণহানির আশংঙ্কা আছে জেনেও পাহাড়ী চূড়া থেকে সরে যাচ্ছেনা। বর্ষা মৌসুম এলে তাদেরকে আতংকের মধ্যে থাকতে হয়। কিন্তু কখনো কেউ তাদেরকে কার্যত সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি। পাহাড়ে অত্যান্ত ঝুকির মধ্যে বসবাসরতদের বিষয়ে উপজেলা পরিষদে সঠিক কোন পরিসংখ্যানও নেই। বর্ষা মৌসুমের শুরতে জেলা প্রশাসনের চাপের মূখে উপজেলা প্রশাসন মাইকিংয়ের মাধ্যমে সরিয়ে যেতে বললেও কার্যত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়না ঝুকিপূর্ণে থাকা মানুষগুলোর জন্য।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: আলম জানান, তারঁ ইউনিয়নে মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ পাহাড় না থাকলেও কয়েকটি গ্রামের মানুষ পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করে। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে এসব গ্রামের মানুষকে শর্তকাবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে। তবে, পাহাড়ে বসবসকারী অধিকাংশরাই অসহায় দরিদ্র মানুষ। তাদের একমাত্র সম্ভল শুধুমাত্র একটি পাহাড়, তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব অসহায় মানুষ যাতে বিকল্প ব্যবস্থায় থাকতে পারে সেদিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাহাড়ী পাদদেশে যারা বসবাস করছে তাদের মধ্যে অনেকে জায়গার প্রশ্রস্ততা বৃদ্ধি, আবার কেউ জমির মূল্য বৃদ্ধির কারণ পাহাড়ের অনেকাংশ কেটে ফেলায় টিলাগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। বর্ষা মৌসুমে এসব পাহাড় ধ্বসে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বিচারে এভাবে পাহাড় কর্তনের কারণে পাহাড় ধ্বস হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান।
নাইক্ষ্যংছড়ির স্কুল পাড়ার স্কুল শিক্ষক রফিক উদ্দিন  জানান, ঝুকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশে যারা বসবাস করছে তারা নিম্ন আয়ের মানুষ। জীবনের ঝুকি আছে তা জানার পরও তারা সেখানে বসবাস করে। তবে সরকারিভাবে তাদের পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করে অন্যত্র সরিয়ে নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি করেন তিনি। সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার বলেন,- সরকারের উন্নয়ন কাজের জন্য রাস্তা ও ভবন নিমার্ণ করতে গিয়ে পাহাড় কাটঁতে হয়, পরবর্তীতে পাহাড় কাটার অংশ থেকে বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধ্বস হয়।
সোনাইছড়ি ও দৌছড়ির চেয়ারম্যান যথাক্রমে এ্যানিং মার্মা ও হাবিব উল্লাহ বলেন- পাহাড়ী জনপদ ও নতুন নতুন রাস্তা এবং ভবণ নিমার্ণের ফলে আমার ইউনিয়নে পাহাড় ভেঙ্গে মানুষজন হতাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সালমা ফেরদৌস বলেন,- জনসাধারণ একটু সর্তকতা অবলম্বন করলেই পাহাড় ধ্বস থেকে রক্ষা পেতে পারে। তারপরও পাহাড়ী ঢলে প্রাণহানির ঘটনা যাতে না ঘটে, এজন্য বর্ষা শুরুর আগেই প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে প্রশাসনের মাধ্যমে পাহাড়ে বসবাসরতদের নিরাপদ স্থানে থাকতে বলা হয়।
গত ১১ সেপ্টেম্বর বান্দরবান পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড লাঙ্গী পাড়ার মুখে  একটি এস্কেবেটর রাস্তার পাশে, পাহাড় কেঁটে মাটিগুলো ড্রাম ট্রাক যোগে অন্যত্রে সরিয়ে ফেলছিল। হঠাৎ উপর থেকে পাহাড়ের একটি বিশাল অংশ ধ্বসে এস্কেবেটর ও ড্রাম ট্রাকের উপর পড়ে।
এসময় এস্কেবেটরসহ চালক এবং মিনি ট্রাকটি মাটি চাপা পড়ে। দ্রুত স্থানীয়রা এগিয়ে এসে গুরুতর আহত অবস্থায় এস্কেবেটরের চালক মো. মনির হোসেন (২৫) কে উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION